________পর্ব-৪_____________
শিহাবকে কোলে তুলে নিয়ে শিহাবের বাড়ির দিকে
হাঁটতে লাগলো অশরীরী ইভা!
ভয়ংকর এক গর্জন শুনা গেল
হঠাৎ পেছন থেকে।
ইভা ঘুরে তাকাল।
দেখল,
একটা ভ্যাম্পায়ার ইতিমধ্যে ডাক্তার ইমতিয়াজ এর
সব রক্ত চুষে খেয়ে ফেলেছে।
কিন্তু রক্তের নেশা তার তখনো কাটেনি।
আরও রক্ত চাই তার।
জীবন্ত মানুষের গন্ধ নাকে আসতেই
ভ্যাম্পায়ারটা এগিয়ে যেতে লাগল শিহাবের দিকে।
অশরীরী ইভা শিহাবকে মাটিতে শুয়ে দিল।
তারপর দ্রুতবেগে শকুনের মতো ছোবল মেরে শিহাবের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে গেল ভ্যাম্পায়ারটাকে।
প্রথমেই সে ভ্যাম্পায়ারটার লম্বা লম্বা দাঁতগুলো ভেঙে দিল,
যে দাঁতগুলো দিয়ে তারা মানুষের ঘাড় মটকে রক্তচুষে খাই।
এই ভ্যাম্পায়ারটা তার ভালোবাসার
মানুষটির রক্ত খেতে চেয়েছে, আজ তাকে জীবন্ত ছাড়বেনা সে।
খুরের মতো লম্বা লম্বা নখগুলো আবার বের করল ইভা।
তারপর ভ্যাম্পায়ারটাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দুইভাগ করে ফেলল। ছটফট করতে করতে মারা গেল ভ্যাম্পায়ারটা।
শিহাবের অস্তিত্ব কোথাও খুঁজে পেলনা ইভা। চারদিক নিস্তব্ধ নির্জন।
শিহাবকে যে জায়গাটি তে শুয়ে দিয়েছিল, সেই জায়গাটাও শূন্য। অজ্ঞান শিহাবের পক্ষে নিজে নিজে বাসায় যাওয়া সম্ভব না। শিহাবের বিপদ অনুমান করল ইভা। তারপর এক ভয়ংকর চিৎকার দিয়ে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে তুলল সে।
__________জীন বনাম অশরীরী________
যখন জ্ঞান ফিরে এল শিহাব দেখল, তার পাশে একটা মেয়ে বসে আছে। টানা টানা চোখ, গোলাপি ঠোট, মায়াবী চেহারা, আর ঠোটে পাগল করা এক হাসি।
শিহাব তাকে জিজ্ঞেস করল: কে আপনি? আর আমিই বা কোথায় এলাম? মেয়েটি জবাব দিল: আমি আশা মনি, জীনের মেয়ে। পথে একটা মানব যুবককে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সাথে নিয়ে এলাম। আসলে তোমার সুন্দর চেহারটা দেখে প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। তাই নিয়ে এলাম।
কিন্তু আমি এখন বাসায় যেতে চাই।
-তোমাকে তো যেতে দেওয়া হবেনা। আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। তারপর তুমি আমাদের জগতে থেকে যাবে।
-নাহ, অসম্ভব।" চিৎকার করে উঠল শিহাব। "আমি সাদিয়াকে ভালোবাসি।"
--সাদিয়া? সে যদি পৃথিবীতে না থাকে, তখন???
--মানে? কি বলতে চাও তুমি?
--মেরে ফেলব আমি সাদিয়াকে।" কথাটা শেষ করেই দ্রুতবেগে বেরিয়ে গেল আশামনি শিহাবকে আটকে রেখে।
।
রাত বাজে দুইটা। তখন একটা কালো রঙের গাড়ি খুব স্পিডে ছুটে চলেছে মেইনরোড ধরে। ড্রাইভিং সিটে আছে বিশিষ্ট শিল্পপতি শরীফ চৌধুরী, আর পাশে বসে আছে তার হবু স্ত্রী সাদিয়া।
পার্টি শেষ করে বাসায় ফিরতেছিল তারা। হঠাৎ দেখতে পেল তারা একটা মেয়ের আকৃতিতে কিছু একটা দাড়িয়ে আছে। শরীফ গাড়িটাকে থামাতে চেষ্টা করল।কিন্তু ঐ মেয়েটাকে পিষে দিল গাড়ির চাকায়। স্পিড কমাতে পারেনি সে। গাড়ি যখন থামল, দু'জনে গাড়ি থেকে নামল। দৌড়ে গেল সেই এক্সিডেন্ট এর জায়গায়। কিন্তু আশ্চর্য সেখানে এক্সিডেন্টের চিহ্নমাত্র নেই। কেউ যেন হঠাৎ অট্টহাসি হেসে উঠল। মনে হল কেউ তাদের অবস্থা দেখে বিদ্রুপের হাসি হাসল।
দু'জনে একসাথে চিৎকার করে উঠল: কে? আড়াল থেকে বেরিয়ে এস।
ধীরে ধীরে তাদের সামনে উদয় হল ভয়ংকর এক নারীমূর্তি। বিদ্রুপ করে বলল: তোরা আমাকে গাড়িতে পিষে মেরে ফেললি?
;
ভয় পেয়ে দু'জন দৌড়ে গেল গাড়ির দিকে। গাড়িতে যখন উঠতে যাবে, তখন দেখতে পেল ড্রাইভিং সিটে বসে আছে সেই নারী ভূতটা। হলুদ দুটো চোখ তার তাকিয়ে আছে দু'জনের দিকে। মুখে সেই বিদ্রুপের হাসি লেগে আছে তার। বলল: অনেকদিন ধরে ক্ষুধার্ত। আজ তোদের খাব।" হাত দুটো বাড়াল সে দু'জনের দিকে। দুজন আবার পেছনে ঘুরে পালাতে যাবে তখন কেউ একজনের সাথে ধাক্কা খেল। দেখল সেই ভূতটা।
গাড়ির ড্রাইভিং সিটে নেই সে। দু'জনের দিকে আবারও হাত বাড়াল সে। চিৎকার করে মুখ ঢেকে ফেলল তারা। হঠাৎ একটা আলোর ঝিলিক এসে ভূতটাকে অাক্রমণ করল। আলোর ঝিলিকটা ধীরে ধীরে একটা মেয়ের আকৃতি ধারণ করল। ভূত আর সেই মেয়ের মধ্যে তখন যুদ্ধ লেগে গেল। সাদিয়া আর শরীফ তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে গাড়ি ছেড়ে দিল। গাড়ির স্পিড বাড়িয়ে দিল। কিছুদূর গিয়ে গাড়ি আপনাআপনিই থেমে গেল। কি হচ্ছে এসব? কিছুই বুঝা যাচ্ছে না। হঠাৎ সামনে এল অপরূপ সুন্দরী এক মেয়ে। মেয়েটা গাড়িটাকে ওভারব্রীজ থেকে ফেলে দিল। জোরে হেসে উঠল তারপর, চিৎকার করল: শিহাব শুধু আমার। এই আশামনির কাছ থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবেনা তাকে।
;
আচমকা ঘটল পরের ঘটনাটি। শরীফের গাড়ি নিচে পড়তে যাচ্ছে, আর তখনই আগের সেই আলোর ঝিলিকটা এসে গাড়িটাকে ধরে ফেলল। গাড়িটাকে আবারও উপর দিকে উঠতে দেখে আশামনি আশাহত হল। কে তার কাজে বাধা দিল? কে এই নতুন শত্রু? লড়ার জন্য প্রস্তুত হল সে।
;
গাড়িটাকে ওভারব্রিজের উপর রেখে ঐ আলোর ঝিলিকটা ঘূর্ণিপাকের মতো ঘুরতে ঘুরতে একটা নারীমূর্তি ধারণ করল। তারপর সে আশামনির দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। আশামনি একটু ভয় পেল। সে বলল: কে তুমি? দেখ, তোমার আর আমার মাঝে কোন শত্রুতা নেই। সরে যাও তুমি। ঐ সাদিয়া বেঁচে থাকলে আমি কখনও শিহাবকে পাবনা।
--ওকে আমি আমাদের জীনের জগতে নিয়ে গেছি।"
আশামনির কথা শেষ না হতেই নতুন শত্রু তাকে আক্রমণ করল। আশামনি তখন সেখান থেকে অদৃশ্য হয়ে পালিয়ে গেল।
সাদিয়া এবং শরীফ গাড়ি থেকে বের হল। কে এই উপকারী বন্ধু, যে তাদেরকে দুইবার বাঁচিয়েছে? দেখার জন্য তারা ওর দিকে তাকাল। তারপর চমকে উঠল সাদিয়া। বলল:- ইভা, তুই!!!!!!!!!!!!
চলবে.........
____________\\\\\\\______________
No comments:
Post a Comment
Thank You!